ওমর ফারুক, বিশেষ প্রতিনিধিঃ ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারের একজন উদ্যোক্তা। অনিয়মই যেন তার নিত্যদিনের সঙ্গী। বর্তমানে তিনি ফরিদপুর সদরের কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত রয়েছে।

তার বিরুদ্ধে গত ৩১ আগস্ট দৈনিক বাঙ্গালী সময় পত্রিকায় অনিয়মের নিউজ প্রকাশিত হলে অপরাধ আড়াল করতে দৌড়ঝাপ শুরু করেন।

সংবাদের প্রকাশের জেরে ক্ষিপ্ত হয়ে দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অর্ধলক্ষ টাকার চাঁদাবাজিরও অভিযোগ করেন। অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্ট পরিষদের চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে কাউকেই তোয়াক্কা করে না এই উদ্যোক্তা। তাহলে তার খুটির জোর কোথায়?- এমনই প্রশ্ন ভুক্তভোগীদের মুখে।

তার অনিয়মের বিরুদ্ধে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি’র সকল সদস্য। অভিযোগে বলা হয়, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন, ওয়ারিশ সনদ, নাগরিক সনদপত্র সহ সকল প্রকার সনদপ্রতি নির্ধারিত ফি ছাড়াও গোপনে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে থাকেন তিনি।

পরিষদের কোনো সদস্যের সুপারিশ তোয়াক্কা না করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে থাকেন। বেশির ভাগ সনদের ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃত ভুল করে থাকেন এবং কাগজ হারিয়ে যাওয়ার কথা বলে, পরবর্তিতে অতিরিক্ত টাকা নেন সেবা প্রত্যাশীদের কাছ থেকে। এছাড়াও নানা অভিযোগ তোলা হয় তার বিরুদ্ধে।

বিষয়টি নিয়ে দৈনিক বাঙ্গালী সময় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে ৫০ হাজার টাকার চাঁদাবাজীর অভিযোগ তুলে দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ফরিদপুর প্রেসক্লাব, পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসন বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন অভিযুক্ত উদ্যোক্তা।

এছাড়া অপরাধ আড়াল করতে মানববন্ধনের নামে গতকাল সোমবার দুপুরে ফরিদপুর থেকে ৬ সাংবাদিককে ডেকে নেন নিজেই। এতেই বেড়িয়ে আসে আসল কাহিনী। উক্ত সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়ে ঘাবড়িয়ে যান অভিযুক্ত উদ্যোক্তা।

উক্ত সাংবাদিকদের ভাষ্যমতে, অনিয়মের সংবাদ প্রকাশে দুই সাংবাদিককে জড়িয়ে যে চাঁদাবাজির অভিযোগ আনা হয়, তার সঠিক প্রমাণ দিতে পারেননি তিনি। টাকা কিভাবে চেয়েছে?- এমন প্রশ্ন তাকে করা হলে তিনি বলেন, সরাসরি চাননি, কথা বার্তায় বুঝিয়েছেন।

তাতেই ৫০ হাজার টাকা চেয়েছে, কীভাবে বুঝলেন? উত্তরে বলেন, কাগজে ৫০ লিখেছে। তারও কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি তিনি। এছাড়া এলোমেলো উত্তর দিতে থাকেন।

সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বলেন, গোপনে সে যদি অতিরিক্ত টাকা নিয়ে থাকেন, সেটা আমার জানার বাইরে। আমাদের কাছেও অনেকে অভিযোগ দিয়ে থাকেন, সেই প্রেক্ষিতে আমরা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দিয়েছিলাম।

চাঁদাবাজির বিষয়ে উদ্যোক্তা ওমর ফারুকের মুঠোফোনে জানতে চাইলে, প্রথমে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কেটে দেন।

পরবর্তীতে আবার ফোন করা হলে সাংবাদিকদের চাঁদাবাজীর প্রসঙ্গ বলতেই ফোন কেটে দেন এবং তিনিই ফোন দিয়ে বলেন, সামনে লোকজন আছে, পরে ফোন দিবানে আপনাকে।

অভিযুক্ত উদ্যোক্তার অভিযোগের বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক আসলাম মোল্লা বলেন, ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। দোষী প্রমান হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।